গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা এতটাই বেড়ে গেছে যে আজকাল পেটে গ্যাস বা গ্যাস্ট্রিক নেই এমন একজনকেও বোধ হয় খুঁজে পাওয়া যাবে না। অতিরিক্ত তেলেভাজা ও তেল জাতীয় খাবার, সফট ড্রিংকস, ঝাল খাবার, খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে না খাওয়া, খাবার খাওয়ার সাথে সাথে পানি পান, এমনকি অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার জন্যও পেটে গ্যাস জমতে পারে। পেটে জমা গ্যাস তাড়াতে নানা ধরনের ওষুধ ব্যাগে রাখতে হচ্ছে প্রতিনিয়তই। ভারী খাবার খাওয়ার পরই মনে জমছে শঙ্কা, এই বুঝি শুরু হবে অস্বস্তি আর বুকে-পেটে ব্যথা। হঠাত-ই পেটে গ্যাসের সমস্যা হলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াযুক্ত ঔষধ না খেয়ে হাতের নাগালে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহারের মাধ্যমে ফিরে পেতে পারেন স্বস্তি।
০১. কলাঃ
সারাদিনে অন্তত দুটো কলা খান। পেট পরিষ্কার রাখতে কলার জুড়ি নেই।
০২. ঠান্ডা দুধঃ
এক গ্লাস ঠান্ডা দুধ পান করলে অ্যাসিডি/গ্যাস্ট্রিক দূরে থাকে।
০৩. দারুচিনিঃ
এটি হজমের জন্য খুবই ভাল। এক গ্লাস পানিতে আঁধা চামচ দারুচিনির গুঁড়ো দিয়ে ফুটিয়ে দিনে ২ থেকে ৩ বার খেলে গ্যাস দূরে থাকবে। অথবা এক গ্লাস দুধে ১/২ চা চামচ দারুচিনি গুড়া ও মধু মিশিয়ে খান, পেটের গ্যাস উধাও হয়ে যাবে।
০৪. মৌরির জলঃ
পানিতে মৌরি ভিজিয়ে সেই পানি পান করলে গ্যাস দূর হয়ে যাবে।
০৫. জিরাঃ
জিরা পেটের গ্যাস, বমি, পায়খানা, রক্তবিকার প্রভৃতিতে অত্যন্ত ফলপ্রদ। জ্বর হলে ৫০ গ্রাম জিরা আখের গুড়ের মধ্যে ভালো করে মিশিয়ে ১০ গ্রাম করে পাঁচটি বড়ি তৈরি করতে হবে। দিনে তিনবার এর একটি করে বড়ি খেলে ঘাম দিয়ে জ্বর সেরে যাবে।
০৬. লবঙ্গ/লংঃ
২/৩টি লবঙ্গ মুখে দিয়ে চুষলে একদিকে বুক জ্বালা, বমিবমিভাব, গ্যাস দূর হয়। সঙ্গে মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়।
০৭. এলাচঃ
লবঙ্গের মত এলাচ গুঁড়ো খেলে অম্বল/গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা নির্মূল হয়।
০৮. পুদিনা পাতার জলঃ
এক কাপ জলে ৫টা পুদিনা পাতা দিয়ে ফুটিয়ে খান। পেট ফাঁপা, বমিভাব দূরে রাখতে এর বিকল্প নেই।
০৯. আমলকিঃ
আমলকি টুকরো করে রোদে দিয়ে শুকিয়ে পাউডার করে পানির সাথে মিশিয়ে পান করলে গ্যাস জনিত সমস্যা সেরে যাবে।
১০. আদাঃ
পেটে গ্যাস ও বদহজমজনিত সমস্যা সমাধানে আদা খুব উপকারী। খাবারে আদা যোগ করে বা কিছু পরিমাণ আদা চিবিয়ে রসটুকু গ্রহণ করলে পেটে গ্যাস প্রতিরোধ করা যায়। অথবা খাওয়ার পর আদা চটকিয়ে খেতে পারেন। এছাড়াও আদা সিদ্ধ পানিতে লবণ দিয়েও খেতে পারেন। আদা চা খেলেও একই উপকার পাওয়া যাবে।
১১. সরিষাঃ
সরিষা গ্যাস সারাতে সাহায্য করে। বিভিন্ন খাবারের সাথে সরিষা যুক্ত করে খেলে পেটে গ্যাস সৃষ্টিতে বাঁধা দিবে।
১২. হলুদঃ
হলুদ গ্যাসের ভালো ঔষধ। প্রতিদিন একগ্লাস দুধে দুই চা চামচ হলুদ বাটা মিশিয়ে খেলে উপকার পাবেন।
১৩. পেয়ারা পাতাঃ
পেয়ারা খেতে যেমন সুস্বাদু, তেমনি এর পাতাও বেশ উপকারি। ৫ থেকে ৬টি পেয়ারা পাতা পানিতে ১০ মিনিট সেদ্ধ করুন। তারপর ছেঁকে ঠাণ্ডা করে পানি পান করুন। গ্যাস্ট্রিক সারাতে এটি সবচেয়ে সহজ সমাধান।
১৪. আলুর রসঃ
খাওয়ার আগে ১/২ কাপ আলুর রস পান করুন। দিনে তিনবার খেলে উপকার পাবেন।
১৫. বেকিং পাউডারঃ
বেকিং সোডা শুধু মজাদার খাবারেই ব্যবহৃত হয় না, গ্যাস তাড়াতেও এটি খুব ভালো কাজ করে। একগ্লাস পানিতে ১/৪ চা চামচ বেকিং পাউডার মিশিয়ে পান করুন। এছাড়াও এক গ্লাস পানিতে লেবুর রস ও এক চিমটি বেকিং পাউডার মিশিয়ে খেলেও উপকার পাবেন।
১৬. আপেল সাইডার ভিনেগারঃ
এক গ্লাস গরম পানিতে দুই টেবিল চামচ আপেল সাইডার ভিনেগার মিশিয়ে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রেখে ঠাণ্ডা করুন। ঠাণ্ডা হয়ে এলে ধীরে ধীরে পান করুন।
১৭. মেথি বীজঃ
প্রতিদিন এক টেবিল চামচ মেথি বীজ হাফ গ্লাস পানিতে রাতে ভিজিয়ে রেখে ফজরের নামাজ শেষে সকালে খালি পেটে পানি টুকু পান করলে ম্যাজিকের মতো কাজ করে। এটি ডায়াবেটিস রোগিদের জন্যেও উপকারী।
১৮. বহেরা+হরিতকি+আমলকিঃ
তিনটা উপাদান রোদে শুকিয়ে গুড়া করে একসাথে মিশিয়ে ২ চা চামচ গুড়া হাফ গ্লাস কুসুম গরম পানিতে মিশিয়ে সকালে খালি পেটে পান করলে গ্যাস জনিত সমস্যা তো দূর হবেই, সেই সাথে কোষ্ঠকাঠিন্য নির্মূল হবে।