25 C
Dhaka
Wednesday, December 6, 2023
বাড়িধর্ম ও নৈতিকতাকুরআন জানা ও মানা আমাদের সকলের জন্য জরুরি

কুরআন জানা ও মানা আমাদের সকলের জন্য জরুরি

কুরআন সত্য। কুরআন সর্বজয়ী সর্বজ্ঞানী মহান আল্লাহর বাণী। কুরআনের ভাষা ও বক্তব্য চিরন্তন চির  সত্য ও চিরঞ্জীব। বিশ্ববাসীর কাছে কুরআন এক জীবন্ত মু’জিযা। মানব সমাজের সাফল্য কিংবা ব্যর্থতা শুধুমাত্র আল কুরআনের মধ্যেই নিহিত। এই মহাগ্রন্থ আল কুরআন-

০১. অদৃশ্য স্রষ্টার দৃশ্য বাণী: মানুষ তার স্রষ্টা মহান আল্লাহকে দেখেনা তিনি অদৃশ্য তিনি অনুভবের। কিন্তু আমরা তাঁর বাণী পড়ি দেখি শুনি। তাঁর বাণী পড়ে আমরা আবেগ আপ্লুত হই। কুরআন আমাদেরকে অনুভব ও বিশ্বাসে আল্লাহর সান্নিধ্যে পৌঁছে দেয়। আমরা কথা বলি আমাদের প্রিয় প্রভুর সাথে কুরআনের ভাষায় ।

০২. অফুরন্ত জ্ঞান ভান্ডার: মহাগ্রন্থ আল কুরআন জ্ঞানের এক অফুরন্ত ভান্ডার  যা কখনো ফুরায়না। এর জ্ঞান ভান্ডার কখনো অতীতের গর্ভে বিলীন হয় না এবং ভবিষ্যতের আগমনে অকেজো হয়না। সূর্যালোকের মতো প্রতিদিনই ঘটে এর জ্ঞানের আলো।

০৩. সত্য অনির্বাণ: একদিকে অবতরণের সূচনা থেকেই কুরআনের সত্যতা ছিল অনাবিল স্বচ্ছ। অপরদিকে মানব জ্ঞানের পরিধি যতই বাড়ছে ততোই প্রকাশিত ও বিকশিত হচ্ছে আল কুরআনের বিস্ময় ও সত্যতা।

০৪. কুরআন কাঁপিয়ে দেয় হৃদয়: যে মনোযোগ দিয়ে কুরআন পড়ে বুঝার চেষ্টা করে কুরআনের বক্তব্য যতোই পাষাণ হৃদয় কুরআন কাঁপিয়ে তোলে তার সত্তাকে। তারপর বিগলিত করে দেয় তার হৃদয় মন ।

০৫. কুরআন শত্রুকে করে দেয় আপন: আল্লাহর রাসূলের যারা ছিলো  শত্রু কুরআন শুনে কিংবা কুরআন পড়ে তারা হয়ে যায় তাঁর প্রাণের বন্ধু। উমর আমার আকরাম এবং খালিদ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) ইতিহাস তো আর ইতিহাস থেকে মুছে যায়নি। আজো চলছে সেই ধারা।

 

০৬. অবিকৃত: কুরআন যেভাবে অবতীর্ণ হয়েছে, আজো হুবহু সেভাবে বর্তমান রয়েছে। দেড় হাজার বছরের একটি অক্ষরও বিকৃত হওয়ার প্রমান নেই। প্রয়োজন পড়ে না এর একটি বক্তব্য ও, সংস্কার করার।

০৭. সর্বাধিক পঠিত গ্রন্থ: কুরআন পৃথিবীর সর্বাধিক পঠিত গ্রন্থ। প্রতি মুহূর্তে পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষ কুরআন পাঠ করে। কেউ সালাতে পাঠ করে, কেউ তেলাওয়াত করে, কেউ শিক্ষাদান করে, কেউ অধ্যয়ন করে, কেউ এর দাওয়াত ও প্রচারের কাজ করে, কেউ এর তাফসির করে, কেউ গবেষণা করে, কেউ মুখস্ত করে। কুরআনের মতো এতো অধিক পঠিত গ্রন্থ পৃথিবীতে আর নেই ।

৮. সবচেয়ে মর্যাদাবান গ্রন্থ: বিশ্বাসী লোকের কুরআনকে যত বেশি মর্যাদা দেয়, আর কোনো গ্রন্থের প্রেমিক লোকেরা সেই গ্রন্থকে এত বেশি মর্যাদা দেয়না। পড়া, বুঝা, জানা, মানা, অনুসরণ করা, শিক্ষা দান করা, প্রচার করা, কার্যকর করা এবং এর আলোকে জীবন ও সমাজ গড়ার কাজ করা -এগুলো হচ্ছে এ গ্রন্থের প্রতি মর্যাদা দেয়ার উপায়। এরকম মর্যাদা এতো বিপুল মানুষ কর্তৃক আর কোনো গ্রন্থকেই দেয়া হয়না।

৯ . সব সমস্যার সমাধান: মহাগ্রন্থ আল কুরআন সব সমস্যার সমাধান। গবেষণার পর গবেষণা চালিয়ে এবং গ্রন্থের পর গ্রন্থ রচনা করে মানুষ তাদের যেসব সমস্যার সমাধান করতে পারেনি, এই মহাগ্রন্থ মাত্র চারটি বাক্যে সেই সব সমস্যার সমাধান পেশ করে দিয়েছে।

১০. শান্তির পথ মুক্তির পথ: মানবজাতির শান্তি ও কল্যাণের এবং মুক্তি ও সাফল্যের সত্যিকার ফর্মুলা কেবলমাত্র কুরআনেই রয়েছে। কারণ, এটি মানুষের স্রষ্টা সর্বজ্ঞানী মহান আল্লাহ্ অনির্বাণ আলো। দুনিয়া ও আখিরাতের সমস্ত সাফল্য এর মধ্যেই রয়েছে নিহিত।

 

কুরআন মহাসত্যের আলো

পরম করুণাময় আল্লাহ মানুষের জীবন-দর্শন ও জীবন-যাপন পদ্ধতি হিসেবে নাযিল করেছেন আল কুরআন মহাসত্যের আলো এবং মানুষের শান্তি মুক্তি ও কল্যাণের একমাত্র গ্যারান্টি। মহান আল্লাহ বলেন:

“আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে এসেছে এক আলো (নবী মুহাম্মদ সা.) এবং একটি সত্য ও সঠিক পথ প্রকাশকারী কিতাব যার দ্বারা আল্লাহ তাঁর সন্তোষ সন্ধানকারীদের শান্তি ও নিরাপত্তার পথ দেখান এবং নিজের ইচ্ছায় তিনি তাদের বের করে আনেন অন্ধকার থেকে আলোর দিকে আর তাদের পরিচালিত করেন সরল -সঠিক পথে।” (সূরা ৫ আল মায়িদা: আয়াত ১৫-১৬)

“হে মুহাম্মদ! এটি একটি কিতাব। আমরা এটি তোমার প্রতি নাযিল করেছি, যাতে করে তুমি মানুষকে অন্ধকার রাশি থেকে নিয়ে আসো আলোতে।” (সূরা ১৪ | ইবরাহিম: আয়াত ১)

কুরআন বুঝা ফরয

কিন্তু, যে ব্যক্তি কুরআন জানলোনা, বুঝলো না, তার কাছে তো আলো আর অন্ধকার দুটোই সমান। সুতরাং আলো দেখতে হলে কুরআন বুঝতে হবে। কুরআন না বুঝলে আলোতে আসার সুযোগ কোথায়? আর কুরআন তো বোঝার জন্য সহজ করেই নাযিল করা হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন:

“তারা কি কুরআন নিয়ে চিন্তা ভাবনা করেনা? নাকি তাদের অন্তর গুলোতে তালা
লাগানো রয়েছে?” (সূরা ৪৭ মুহাম্মদ: আয়াত ২৪) “অবশ্যই আমরা এ কুরআন বোঝার জন্য সহজ করে নাযিল করেছি। অতএব কে আছে এ থেকে উপদেশ গ্রহণ করবে? (সূরা ৫৪ আল কামার: আয়াত ৪০)

 

কুরআন মানা ও অনুসরণ করা অত্যাবশ্যক

যে কোনো বাণীর মতো কুরআন জানা ও বুঝার সাথে সাথে মানা জরুরি। কুরআন মানা অনুসরণ করা ও বাস্তবায়ন করার জন্য নাযিল করা হয়েছে । আল্লাহ পাক বলেন:

“আর আমাদের অবতীর্ণ এ কিতাব সৌভাগ্যের চাবিকাঠি। তাই তোমরা এটিকে অনুসরণ করো, মেনে চলো এবং (এতে প্রদত্ত) নির্দেশ অমান্য করাকে ভয় করো। আশা করা যায় এভাবেই তোমরা (আল্লাহর) অনুকম্পা লাভ করতে সক্ষম হবে। (সূরা ৬ আল আনআম: আয়াত ১৫৫)

“(হে মুহাম্মদ!) আমরা এ মহাসত্য কিতাব তোমার প্রতি অবতীর্ণ করেছি গোটা মানব সমাজের জন্যে। এখন যে ব্যক্তিই এতে প্রদর্শিত পথের অনুসরণ করবে, তাতে সে নিজেরই কল্যাণ করবে।” (সূরা ৩৯ যুমার: আয়াত ৪১)

আপনার বিবেক কী বলে?

– মোঃ মোতাছিম বিল্লাহ

ছাত্র সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
সম্পর্কিত

মন্তব্য বাদ দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন

সর্বাধিক পঠিত