25 C
Dhaka
Wednesday, December 6, 2023
বাড়িগল্পবুমেরাং

বুমেরাং

বাজার করতে বের হয়েছেন ডাক্তার মিজান। বৃহস্পতিবারে যা একটু সময় পাওয়া যায় বাজার করার জন্য। সারা সপ্তাহ ব্যস্ততায় কাটে তার। তাই সপ্তাহের এই দিনটায় বাজার করেন। তিনি। আজকেও বাজারে এসেছেন। বাজারে জিনিসপত্রের। দাম শুনে মাথা চক্কর দিচ্ছে তার। নিজেও পুরো বাজার দু-তিনবার চক্কর দিলেন। স্টেথোস্কোপটা থাকলে বুকের ধুকপুকুনিটা শোনা যেতো।

যাইহোক মরিচ কিনতে হবে। মরিচের দাম নাকি খুব বেড়েছে। তবুও প্রয়োজন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস মরিচ কিনতে এক দোকানে এলেন মিজান। বিশ ত্রিশ বছরের এক যুবক বসে আছে দোকানে।
“মরিচ কত করে?”
“৪৫০ টাকা কেজি, স্যার”
“আচ্ছা আমাকে আধা কেজি দাও”
আধা কেজি মরিচ নিয়ে টাকা দিলেন মিজান সাহেব। ২২৫ টাকা।
টাকা দিয়ে চলে যাচ্ছিলেন ডাক্তার মিজান। এমন সময় দোকানির দিকে আবার ঘুরে দাড়ালেন তিনি। দোকানি অন্য একজন ক্রেতাকে দাম মরিচের দাম বলছে ৪০০ টাকা। এগিয়ে গেলেন মিজান।

“কী ব্যাপার, তুমি আমার কাছে দাম মরিচের দাম চাইলে ৪৫০টাকা। আর উনার কাছে ৪০০ টাকা। এটা কোন ধরনের নিয়ম?”
“স্যার, যার কাছে যে-রকম পারি দাম নিই। আপনিতো আধা কেজি নিলেন, আর উনি নিচ্ছেন এক কেজি। তাই দাম কম রাখলাম।”
মেজাজ সপ্তমে উঠল মিজান সাহেবের। তবুও মুখ বন্ধ করে একচুলও দাড়ালেন না তিনি। সোজা বাসায় চলে গেলেন। তার মত ভদ্রলোকের উচ্চবাচ্য মানায় না।


ঠিক তার দু সপ্তাহ পর। চেম্বারে বসে আছেন ডাক্তার মিজান। রোগী দেখছেন। সিরিয়াল অনুযায়ী একের পর এক রোগী আসছে। হঠাৎ এক রোগীর আসলো। দেখে চিনে ফেললেন মিজান। ওইযে মরিচের দোকানি ছেলেটা। মনে মনে জব্দ করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। ছেলেটা তাকে চিনতে পারেনি এখনও।
দোকানির রোগের বিবরণ শুনে প্রেসক্রিপশন দিলেন ডাক্তার মিজান।
“স্যার ভিজিট কতো?”
“৬০০ টাকা”
“৬০০ টাকা! একটু আগে যে রোগীটা বের হলেন উনিতো বললেন আপনার ফি ৫০০ টাকা।” বিস্মিত দোকানি বলল।
“উনার রোগটা আপনারটার চেয়ে কম তাই কম টাকা নিলাম। ”
“এটা কোন ধরনের নিয়ম স্যার?”
“মরিচ যদি এক কেজির ক্রেতা আর আধা কেজির ক্রেতার কাছে দাম ভিন্ন ভিন্ন হয়, তাহলে রোগ অনুযায়ী আমার ফিও ভিন্ন হবে।”
এবার মরিচের দোকানদার ডাক্তার মিজানকে চিনতে পারলো।

টি এইচ মাহির

-লেখক

বহদ্দারহাট, চান্দগাঁও, চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ।

সম্পর্কিত

মন্তব্য বাদ দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন

সর্বাধিক পঠিত