এস. এম. এম. মুসাব্বির উদ্দিন
আমরা সাধারণত অসুস্থ হই বা কোনো শারীরিক কোনো সমস্যা থাকে, তখন আমরা হাসপাতাল বা ক্লিনিকে যাই। সেখানে ডাক্তাররা প্রেসক্রিপশন লেখার সময় কিছু টেস্ট দেয়, যা ডাক্তারি ভাষায় ইনভেস্টিগেশন বলে। এসব টেস্ট রিপোর্ট ভিত্তি করে ডাক্তার বলতে পারবে, আপনি কোন রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। ডাক্তাররা সাধারণত কিছু কমন টেস্ট দেয় যা সচরাচর আমরা হরে থাকি। সেসব টেস্টগুলো হলো:
১) সিবিসি (কম্বাইন্ড ব্লাড কাউন্ট): এই টেস্ট সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। এই টেস্ট সাধারণ যেকোনো জ্বর, রক্তক্ষরণ, ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া ক্ষেত্রে দেওয়া হয়। সিবিসি করাতে ৫০০-৮০০ টাকা লাগে।

২) এক্স-রে: যদি কোনো রোগী কাশি বা কোনো হাড়ের ফ্রাকচার বা হাড় ভেঙে গেলে ডাক্তাররা এক্স রে করায়। এক্স রে মাধ্যমে আমরা ফরেন পার্টিকেল বা কোথায় বা কতটুকু হাড় ভেঙ্গেছে সেটা নির্ণয় করে চিকিৎসা দেয়। তবে এই টেস্ট করাতে ১০০ থেকে ১৫০০ টাকার মধ্যে করানো হয়ে থাকে। যেমন: নরমাল বুকের এক্স রে করাতে লাগে ১০০-৪০০ টাকা, পেটের এক্স রে করাতে ১৫০০-২০০০ টাকা লাগতে পারে, যেকোনো জয়েন্ট এক্স রে করাতে ১০০০ টাকা উপরে লেগে যেতে পারে।

৩) ইউরিন (Urine) টেস্ট: যেকোনো কিডনি, পেটের সমস্যা, লিভারের সমস্যা হলে ডাক্তাররা ইউরিন টেস্ট করায়। যেমন: ক্রিয়েটিনিন টেস্ট করাতে ৪০০-৭০০ টাকা লাগে, গ্লুকোজ টেস্ট করাতে লাগে ৩০০ টাকা, ক্যালসিয়াম টেস্ট করাতে ৮০০ টাকা লাগে। অর্থাৎ ইউরিন টেস্ট করাতে ৪০০-৫০০০ টাকার মধ্যে করানো হয়।

৪) ইসিজি (ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাফ): ইসিজি হলো হৃদপিন্ডের রোগ শনাক্তকরণ পদ্ধতি। এর মাধ্যমে ডাক্তাররা সহজে জানতে পারে যে হৃদপিণ্ড কি সমস্যা হয়েছে, কোথায় হচ্ছে এবং কি কারণে হচ্ছে। সাধারণত ইসিজি করাতে কমপক্ষে ৪০০ টাকা লাগে। তবে জরুরি রোগীর জন্য কখনো কখনো টাকার পরিমাণ বেশি হতে পারে। যেমন: হল্টার ইসিজি করাতে ৫০০০-৮০০০ টাকা লাগে।

৫) আল্ট্রাসনোগ্রাম: আল্ট্রাসনোগ্রাম হলো শব্দ তরঙ্গের মাধ্যমে শরীরের অভ্যন্তরে ছবি পর্দা ব্যবহার করা। এর মাধ্যমে জানা যায় পেট কি সমস্যা হয়েছে। এটি সাধারণত গর্ভকালীন মহিলাদের বেশি ব্যবহৃত হয়। আল্ট্রাসনোগ্রাম করাতে ১২০০-৮০০০ টাকা লেগে যেতে পারে। গর্ভকালীন মহিলাদের ক্ষেত্রে ৩০০০-৮০০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে।

৬) ব্লাড ডোনেশন: কখনো কখনো রোগী রক্ত লাগে, সে ক্ষেত্রে আমরা ডোনারকে দিয়ে রক্ত সংগ্রহ করি। কিন্তু রক্ত সংগ্রহ করার আগে ডোনার ব্লাড নেওয়া, গ্রুপিং, স্ক্রিনিং করাতে ২১০০ টাকা লাগে। উন্নত হাসপাতালগুলোতে আরো বেশি হতে পারে।

আশা করি আমার ছোট লেখা মাধ্যমে আপনারা সবাই জানতে পারবেন এবং সচেতন হতে পারবেন। অনেক রোগী এসব টেস্ট করাতে হিমশিম খাই। তাই এই লেখার মাধ্যমে আপনারা কিছুটা হলেও উপকৃত হতে পারবেন।
শিক্ষার্থী (সেশন: ২০২০–২১)
ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ