Wednesday, March 19, 2025
হোমসম্পাদকীয়প্রচ্ছদ রচনা‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ অরাজকতা নাকি সম্ভাবনা?

‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ অরাজকতা নাকি সম্ভাবনা?

বাংলাদেশের সমাজ-রাজনীতিতে জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসা অচলায়তন ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ভেঙে গেছে। এ অভ্যুত্থানের সবচেয়ে বড় সাফল্য হলো গণতান্ত্রিক, মানবিক, ও বহুত্ববাদী একটি রাষ্ট্র গড়ার সম্ভাবনার পথ উন্মুক্ত হয়েছে। হাজারো প্রাণের আত্মত্যাগে অর্জিত এই ঐক্যের নেতৃত্ব দিয়েছে ছাত্রসমাজ; সর্বস্তরের মানুষ ও রাজনৈতিক দল এতে একত্রিত হয়ে অভ্যুত্থানকে সফল করে তুলেছে।

অভ্যুত্থানের প্রায় পাঁচ মাস পর, গত ৩১ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ প্রকাশের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এ কর্মসূচি জনসাধারণের মধ্যে কৌতূহল ও উদ্দীপনার জন্ম দিয়েছে। তবে, রাজনৈতিক মহলে বিশেষ করে বিএন[ইর পক্ষ থেকে এর প্রভাব নিয়ে কিছু প্রশ্নও উঠেছে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রথমে জানায়, এ কর্মসূচি একটি বেসরকারি উদ্যোগ এবং এর সঙ্গে সরকারের কোনো সরাসরি সম্পৃক্ততা নেই। তবে সরকারে থাকা ছাত্র নেতৃত্বের একটি অংশ এ কর্মসূচির প্রতি তাঁদের সমর্থন প্রকাশ করেছে। পরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এক জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা ও জনগণের ঐক্য সংরক্ষণে একটি জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ঘোষণাপত্রে গণ-অভ্যুত্থানের অর্জন, ফ্যাসিবাদবিরোধী চেতনা এবং রাষ্ট্র সংস্কারের আকাঙ্ক্ষাকে সুসংহত করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হবে।

৫ আগস্টের অভ্যুত্থানের পর ৮ আগস্ট অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার শপথ নিয়ে যাত্রা শুরু করে। বিগত সরকারের অধীনে ধ্বংসপ্রাপ্ত অর্থনীতি ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠনের চ্যালেঞ্জ সামনে রেখে, সরকার ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ খাতে সংস্কার কমিশন গঠন করে। এগুলো হলো নির্বাচনব্যবস্থা, পুলিশ, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, সংবিধান, এবং দুর্নীতি দমন। পরবর্তীতে আরও কয়েকটি কমিশন গঠন করা হয়।

প্রথম ছয় কমিশন ইতোমধ্যে তাদের প্রস্তাব প্রায় চূড়ান্ত করেছে এবং অংশীজনদের মতামত গ্রহণ করেছে। এসব প্রস্তাবের ভিত্তিতে সরকারপ্রধান একটি “ঐকমত্য কমিশন” গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন, যার লক্ষ্য রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা।

গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণের মধ্যে যে পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা জন্ম নিয়েছে, তা পুরোনো ব্যবস্থার প্রতি অনাস্থার স্পষ্ট প্রতিফলন। এই আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবে রূপ দিতে সংস্কার ও নির্বাচনের প্রশ্নে ঐক্যের প্রয়োজন। বিজয় দিবসের ভাষণ এবং ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজের উদ্বোধনীতে অধ্যাপক ইউনূস নির্বাচন নিয়ে প্রাথমিক ধারণা দিয়েছেন। তবে অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া পক্ষগুলোর ঐক্য ও সংহতি বজায় রাখাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের সমাজ-রাজনীতিতে গণতন্ত্র ও মানবিকতার একটি নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। এই অভ্যুত্থানের অন্যতম বড় অর্জন হলো একটি গণতান্ত্রিক, মানবিক, ও বহুত্ববাদী রাষ্ট্র গড়ার সামষ্টিক আকাঙ্ক্ষা, যা হাজারো প্রাণের আত্মত্যাগে সম্ভব হয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা এ উদ্যোগকে স্বাগত জানান এবং ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এই কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের ধারাকে অব্যাহত রাখতে এবং মানবিক ও বহুত্ববাদী রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে আলাপ-আলোচনা ও সংলাপের মাধ্যমে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সামষ্টিক ঐক্য বজায় রেখে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার এ উদ্যোগই সবার প্রত্যাশিত।

জুলাই অভ্যুত্থানের পর সৃষ্ট গণতান্ত্রিক পরিবেশে জনগণ পরিবর্তনের প্রত্যাশা করছে। বিজয় দিবসের ভাষণে অধ্যাপক ইউনূস নির্বাচন আয়োজনের সম্ভাব্য সময় নিয়ে ইঙ্গিত দিয়েছেন। একইসঙ্গে, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে ঐক্য বজায় রেখে সংস্কার ও নির্বাচনে অগ্রসর হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

এদিকে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ প্রকাশের মাধ্যমে তাদের রাজনৈতিক অবস্থান শক্তিশালী করতে চায় বলে সন্দেহ করছে বিএনপি। তাদের মতে, এই আন্দোলন রাজনৈতিক দলগুলোকে বাদ দিয়ে একটি অরাজক পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছে। তবে আন্দোলনকারীদের দাবির পেছনে কারা রয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গেছে। ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ কর্মসূচি জনগণের মধ্যে কৌতূহল সৃষ্টি করলেও, শান্তিপূর্ণ ও সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠনে ঐক্য বজায় রাখা সবচেয়ে জরুরি।

৩০ ডিসেম্বর সোমবার রাতে গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ প্রকাশের উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা হয়। এর ঘণ্টা দুই পর ছাত্ররা ঘোষণাপত্র প্রকাশ থেকে সরে আসার কথা জানায়। এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয় যে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে সরকারের তরফেই ঘোষণাপত্র প্রস্তুত করা হবে। বিএনপির মতে, এই পদক্ষেপের ফলে দেশ সম্ভাব্য নৈরাজ্য থেকে রক্ষা পেয়েছে।

বৈঠকে বিএনপি নেতারা ছাত্রদের ঘোষণাপত্র নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তাদের মতে, ছাত্র আন্দোলনের পূর্ববর্তী দাবিগুলো—যেমন রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের দাবি—দেশে সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক সংকট তৈরি করতে পারত। একইভাবে বাহাত্তরের সংবিধান বাতিলের দাবিও একটি নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষা নস্যাৎ হতে পারে।

স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, তিনি প্রধান উপদেষ্টা এবং ছাত্র নেতাদের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করেছেন। ছাত্রদের ঘোষণাপত্র প্রকাশের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোকে উপেক্ষা করার যে ঝুঁকি তৈরি হচ্ছিল, তা নিয়ে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বৈঠকে বিএনপি নেতারা মনে করেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগ দেশের গণমানুষ ও রাজনৈতিক দলগুলোর স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এর পেছনে দৃশ্যমান কোনো পৃষ্ঠপোষকতা না থাকলেও, এটি বিএনপিকে রাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্রের অংশ হতে পারে বলে তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি, তাদের অর্থায়ন এবং উদ্দেশ্য নিয়ে আলোচনা হয়। এক নেতা প্রশ্ন তোলেন, ছাত্রদের কর্মসূচি ঘিরে সারা দেশ থেকে ঢাকায় লোক আনতে যে অর্থ ব্যয় হচ্ছে, তার উৎস কী, কারণ ছাত্রদের নেতৃত্বে থাকা ব্যক্তিরা আর্থিকভাবে স্বচ্ছল নন।

আরেক নেতা বলেন, ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের অতীত পরিচয় নিয়ে সংশয় রয়েছে। কেউ ছাত্রলীগ বা ছাত্রশিবিরের সাথে জড়িত ছিলেন, যা তাদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে স্পষ্টতা আনে না। বিপ্লবের ঘোষণাপত্রও সময়ের দিক থেকে অসামঞ্জস্যপূর্ণ বলে সমালোচনা হয়। এটি গণঅভ্যুত্থানের আগে প্রকাশ করলে জনগণ বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারত। কিন্তু এখন এটি সংকট বাড়ানোর ঝুঁকি তৈরি করছে।

বৈঠকে ছাত্রদের রাজনৈতিক দল গঠনের সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা হয়। বিএনপি মনে করে, দল গঠন এবং নির্বাচনে অংশ নেওয়া গণতান্ত্রিক অধিকার। তবে যদি এটি ষড়যন্ত্রমূলক বা কর্তৃত্ববাদ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা হয়, জনগণ এবং গণতান্ত্রিক দলগুলো তা মেনে নেবে না। ছাত্রদের উদ্যোগ রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় চালিত হলে বিএনপির আপত্তি থাকবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ আপাতত স্থগিত থাকলেও, এর পেছনে কারা আছে তা নিয়ে বিএনপির মধ্যে সন্দেহ এবং আলোচনা চলছে।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পাঁচ মাস পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘোষণাপত্র প্রকাশের উদ্যোগ বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও সন্দেহ সৃষ্টি করেছে। অনেকেই মনে করেন, এই উদ্যোগের লক্ষ্য হতে পারে নির্বাচন বিলম্বিত করা। বৈষম্যবিরোধীরা শহীদ মিনারে ঘোষণাপত্রে ১৯৭২ সালের সংবিধান বাতিল এবং আওয়ামীলীগকে অপ্রাসঙ্গিক ঘোষণা করার কথা বললেও, শেষ মুহূর্তে তা স্থগিত করে। বিএনপির নেতারা এই উদ্যোগের পেছনে “বিশেষ রাজনৈতিক দল” বা অভ্যন্তরীণ স্বার্থ সংশ্লিষ্টতার সম্ভাবনা দেখলেও, কোনো বিদেশি শক্তির ইন্ধন খুঁজে পাননি।

বিএনপির নেতারা ১৯৭২ সালের সংবিধানকে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত শাসনতন্ত্র হিসেবে উল্লেখ করে, সেটি বাতিলের যে কোনো প্রচেষ্টার বিরোধিতা করেছেন। তারা মনে করেন, প্রয়োজনে সংবিধান যুগোপযোগী করে সংশোধন করা যেতে পারে, তবে এটি বাতিল করা অযৌক্তিক।

অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছেন। বিএনপি সরকারকে সমর্থন জানালেও, তারা দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রকাশের দাবি করে আসছে। প্রধান উপদেষ্টা ২০২৫ সালের শেষ বা ২০২৬ সালের শুরুর দিকে নির্বাচনের সম্ভাবনার কথা জানালেও, বিএনপি সুনির্দিষ্ট সময়সূচি চায়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিএনপি এই ঘোষণাপত্র উদ্যোগকে নির্বাচন বিলম্বিত করার কৌশল হিসেবে দেখছে। সংবিধান বাতিল বা পরিবর্তনের বিষয়ে তারা বরাবরই সতর্ক এবং সমালোচনামুখর।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন আকস্মিকভাবে ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ প্রকাশের ঘোষণা দিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোড়ন সৃষ্টি করে। শনিবার সামাজিক মাধ্যমে এই ঘোষণা আসার পর রবিবার সংবাদ সম্মেলনে হাসনাত আব্দুল্লাহ জানান, ঘোষণাপত্রে ১৯৭২ সালের সংবিধানকে “কবর দেওয়া” হবে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে এ উদ্যোগকে “ব্যক্তিগত উদ্যোগ” বলে উল্লেখ করা হয়।

বিএনপি তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। সোমবার রাতের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে এই ইস্যু নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধান উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাৎ করে বিএনপির অবস্থান তুলে ধরেন। পরে সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়।

বৈষম্যবিরোধীরা দীর্ঘ আলোচনার পর ঘোষণাপত্র প্রকাশ স্থগিত করলেও শহীদ মিনারে সমাবেশ আয়োজন অব্যাহত রাখে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ছাত্রদের এই উদ্যোগের পেছনে কারা উস্কানি দিচ্ছে এবং এর মাধ্যমে বর্তমান সরকারের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার প্রচেষ্টা হচ্ছে কিনা, তা নিয়ে আলোচনা হয়। নেতারা মনে করেন, ঘোষণাপত্রের উদ্যোগ নির্বাচনের দাবিকে গুরুত্বহীন করার চেষ্টা হতে পারে।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আকস্মিক ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ প্রকাশের ঘোষণা নিয়ে বিএনপির মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। দলটির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নেতারা এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য ও অর্থের উৎস নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। অনেকেই মনে করেন, এটি নির্বাচনের সময় বিলম্বিত করার একটি প্রচেষ্টা এবং ক্ষমতায় থাকার সময় পেয়ে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গোছানোর কৌশল হতে পারে।

বিএনপির নেতারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে বৈষম্যবিরোধীরা তাদের সমাবেশে বিএনপিসহ সব পক্ষকে উপস্থিত রেখে নিজেদের ‘কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা’ করতে চাইতে পারে। যদিও এ উদ্যোগে বিদেশি কোনো শক্তির সংশ্লিষ্টতা নেই বলে তারা মনে করেন, তবে দুটি দেশের জড়িত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। বৈঠকে অনেক নেতা মনে করেন, বৈষম্যবিরোধীরা ক্ষমতায় আসার লক্ষ্যে কাজ করছে এবং বর্তমান সরকারের সমর্থনে একটি নতুন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলতে চাইছে। বিএনপি দ্রুততম সময়ে নির্বাচন দাবি করে আসলেও বৈষম্যবিরোধীরা এদিকে আগ্রহী নয় বলে মনে করছেন তারা।

সম্পাদক, দ্যা ক্যাম্পাস মিরর।

এই সম্পর্কিত আরও আর্টিকেল দেখুন

একটি উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

সর্বাধিক পঠিত